এভিয়েশন খাতে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন একটি বেসরকারি এয়ারলাইনস। এর নাম রাখা হয়েছে এয়ার অ্যাসট্রা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই পাখা মেলতে পারে নতুন এ এয়ারলাইনস।
চালু হলে দেশের তৃতীয় বেসরকারি এয়ারলাইনস হিসেবে ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ার অ্যাসট্রা। সবমিলিয়ে এটি হতে যাচ্ছে দেশের একাদশ এয়ারলাইনস। প্রাথমিকভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে ফ্লাইট চালাবে এয়ার অ্যাসট্রা। এতে বিনিয়োগ করছেন একজন জাপান প্রবাসী।
নতুন গঠন হওয়া এই এভিয়েশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ বলেন, ‘গত জুলাইয়ে আমাদের এই কোম্পানিটি গঠন করা হয়। আমরা ৪ আগস্ট বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি প্রি-অ্যাপ্লিকেশন মিটিং করেছি। এর আলোকে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আগস্টজুড়েই নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আমরা এনওসির জন্য আবেদন করব।
‘এনওসি পাওয়ার পরে চারটি লম্বা প্রক্রিয়া শেষ করতে পারলে এয়ারওর্দিনেস সার্টিফিকেট পাব বলে আশা করছি। সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে হয়তো আগামী বছরের জানুয়ারিতেই আমরা আকাশে পাখা মেলতে পারব।’
ইমরান আসিফ জানান, প্রাথমিকভাবে দেশের অভ্যন্তরে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য এটিআর সেভেনটি টু মডেলের উড়োজাহাজ নির্বাচন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা উড়োজাহাজ ভাড়া দেয় এমন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলছি। এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে। এদের একজনের কাছে চারটি উড়োজাহাজ আছে, অন্যজনের কাছে তিনটি। আমরা যদি চারটি উড়োজাহাজ সংগ্রহ করতে পারি, সেক্ষেত্রে হয়তো সাতটি অভ্যন্তরীণ গন্তব্যেই ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।
‘এখনও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এনওসি পাওয়ার পর আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে উড়োজাহাজের স্পেসিফিকেশন পেয়ে যাব, তখন সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হবে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো এয়ারলাইনস ফ্লাইট শুরুর পর প্রথম এক বছর আবশ্যিকভাবে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক বছর পর আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড়ালের অনুমতি চাইতে পারে এয়ারলাইনস।
গত ২৫ বছরে দেশে ১০টি বেসরকারি এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করলেও এখন টিকে আছে মাত্র দুটি। এ সময়ের মধ্যে একে একে পাখা গুটিয়েছে অ্যারো বেঙ্গল, এয়ার পারাবত, রয়্যাল বেঙ্গল, এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, বেস্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার ও রিজেন্ট এয়ার।
সবশেষ করোনার মধ্যে গত বছরের মার্চ থেকে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে আরেকটি এয়ারলাইনস রিজেন্ট এয়ার। কয়েক দফা চালুর কথা বললেও আর ফ্লাইটে ফেরেনি এয়ারলাইনসটি। বন্ধ হয়ে যাওয়া এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে জিএমজি, রিজেন্ট ও ইউনাইটেড আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও চালাত।
দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছাড়াও ফ্লাইটে রয়েছে বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস বাংলা ও নভো এয়ার।
বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘এয়ার অ্যাসট্রার বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনো তথ্য নেই। যদি নতুন কোনো এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করতে চায়, তাহলে বেবিচকের নিয়ম অনুসারে আবেদন করবে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী করণীয় ঠিক করা হবে।’