⏲ রাত ১১:৩৭ শুক্রবার
📆 ২৮ চৈত্র, ১৪৩১, ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬ , ১১ এপ্রিল, ২০২৫
Bangladesh Pakistan Business

পাকিস্তানি পণ্য আমদানিতে ভারতীয় প্রোপাগান্ডা: নজরদারি রেখেছিল বন্দরে

মুহুর্ত অনলাইন: পাকিস্তানি পণ্য আমদানিতে বাধ্য করা হচ্ছে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের, কিংবা ইউনুসের ভারত বিরোধী ষড়যন্ত্র – এমনটাই শিরোনাম হচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে। কিন্তু কেন হঠাৎ ভারতীয় মিডিয়ার এরকম শিরোনাম? আর এই কেন উত্তর খুঁজতে গিয়েই বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।

শেখ হাসিনার সাথে সম্পর্ককে ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দরে নজরদারি চালাতো ভারত। চট্টগ্রামের সাথে যুক্ত থাকা বাণিজ্য রুটগুলোতেও থাকতো ভারতীয় কর্মকর্তাদের করা পাহারা। ফলে বন্দরের সব তথ্যই থাকতো ভারতের আওতায়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এমনই বিস্ফোরক দাবি করা হয়েছে।

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানি জাহাজের নোঙরকে কেন্দ্র করে সোমবার এনডিটিভিতে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক ভারতের জন্য উদ্বেগজনক জানিয়ে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়, পাকিস্তান থেকে পণ্য আনতে আমদানিকারকদের নাকি চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাকিস্তানের সাথে সরাসরি সমুদ্রপথে পণ্য আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম দফায় প্রায় ৩০০ কন্টেইনারে শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য আনা হয়। সে সময় বাংলাদেশের পাকিস্তানি জাহাজ ‘আশা’-কে কেন্দ্র করে তুমুল হইচই শুরু হয় ভারতের জুড়ে।

এক মাসের ব্যবধানে, শনিবার আবারো পাকিস্তান থেকে জাহাজ নোঙর করে চট্টগ্রাম বন্দরে। এবার সেই জাহাজে পাকিস্তান থেকে পণ্য নিয়ে এসেছে আরো আট শতাধিক কন্টেইনার। করাচি বন্দর থেকে আসা পানামার পতাকাবাহী এমভি ইউয়ান জিয়াং ফাজান জাহাজ গতবারের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি পণ্য বহন করছে। সোডা অ্যাশ, ডোলামাইট, মার্বেল ব্লক, ইলেকট্রনিক পণ্য, এর পাশাপাশি গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল ও চিনির একটি বড় চালান এসেছে জাহাজটিতে।

এসব তথ্য উল্লেখ করে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরালো হচ্ছে। আর এমন ঘটনাকে ভারতের জন্য বিরাট উদ্বেগের বলে জানাচ্ছে এনডিটিভি।

গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর বঙ্গোপসাগরের এক কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ ও হাসিনার সরকারের সাথে সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে এই বন্দরে নজরদারি চালানোর কাজ করছে নয়া দিল্লি। এনডিটিভি বলছে, চট্টগ্রামের সাথে যুক্ত থাকা সমুদ্র পথগুলোতেও পড়া নজর রাখতো ভারতীয় কর্মকর্তারা।

গেল আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা সরকারের। এর আগে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও আমদানি খাতে একচেটিয়া প্রভাব ছিল নয়া দিল্লির। ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়া ও বিকল্প বাজার তৈরি না হওয়ায় প্রতিবেশী দেশটির প্রতি নির্ভরশীলতা তৈরি হয় বাংলাদেশের।

তবে হাসিনা সরকার পতনের পর বাংলাদেশে ভারতের একচেটিয়া আধিপত্য বন্ধের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদারের কাজও শুরু করে। সেপ্টেম্বরে আঞ্চলিক প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রথম দফা বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস। দুই মাসের ব্যবধানে মিশরের ডি৮ সম্মেলনে আবারো বৈঠকে বসেন এই দুই নেতা।

এছাড়াও, বাণিজ্য সম্ভাবনা থাকা অন্য দেশগুলোর সাথেও যোগাযোগ বাড়িয়েছে ঢাকা। তবে নিজেদের শত্রু পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের এই যোগাযোগ কোনোভাবেই মানতে পারছে না ভারত।

সংখ্যালঘু ইস্যুতে মিথ্যাচার ও অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপকে কেন্দ্র করে কয়েক মাসে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছে। এদিকে ইকোনমিক টাইমসসহ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো দাবি করছে, পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানির জন্য নাকি বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের চাপ দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এমনকি চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে ভারতের প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত আমদানি চুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করতেও নাকি সরকারে আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের এরকম লাগাতার মিথ্যাচার বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ককে কোথায় নিয়ে যাবে বা এই সম্পর্কের বরফ আদৌ গলবে কিনা, সেটা হয়তোবা সময়ই বলে দেবে।

সূত্র: ডেইলি সান

Muhurto 24 News
📆 আজ: শুক্রবার
🕐 সময় -রাত ১১:৩৭ - (বসন্তকাল)
◘ ২৮ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
◘ ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬ - হিজরী