⏲ রাত ১১:৩১ শুক্রবার
📆 ২৮ চৈত্র, ১৪৩১, ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬ , ১১ এপ্রিল, ২০২৫
Indian Traders Circes

বাংলাদেশী পর্যটক নির্ভর ভারতের অর্থনীতি বিপর্যস্ত, অনাহার অর্ধাহারে ব্যবসায়ীরা

শত্রুতা বাড়িয়ে ভারত নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে। ব্যবসায়ী এবং কৃষক সমাজের ক্ষোভ মোদি সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মুহুর্ত অনলাইন: ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কলকাতায় ব্যবসায়িক পরিসরে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায়। দম্ভ দেখিয়ে বাংলাদেশকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল ভারত। কিন্তু বাস্তবে তারাই শিক্ষা পেয়েছে। বাংলাদেশি পর্যটকদের কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কলকাতার অনেক ব্যবসা এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ থেকে ভিসা পেতে জটিলতা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। বাংলাদেশের পর্যটকরা না আসায় কলকাতায় এখন হাহাকার চলছে। পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ ব্যবসায় বাংলাদেশি ক্রেতার উপর নির্ভরশীল ছিল।

“আমাদের কাস্টমার কমে গেছে, মেইনলি আমরা তো বাংলাদেশি কাস্টমারের উপরেই নির্ভরশীল,” বলেছেন একজন ব্যবসায়ী। হাসপাতালগুলোতে রোগী নেই, ডাক্তার এবং মালিকরা হতাশ। তারা জানিয়েছেন, এভাবে চলতে থাকলে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হবে। চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের অনুপস্থিতিতে আবাসন খাতেও ধস নেমেছে।

কলকাতার নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেছেন এবং অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশের পর্যটকদের অভাবে নিউ মার্কেট এখন কার্যত অচল।

পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় গণমাধ্যম ‘প্রথম কলকাতা’ তাদের এক প্রতিবেদনে ব্যবসায়ীদের করুন আর্তনাতের চিত্র তুলে ধরেছে।

বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ভারতের মোদি সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একাধিক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছিল। তবে ভারতের গণমাধ্যম এবং বিশেষজ্ঞরা একমত যে, বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের অবনতিতে ভারতেরই ক্ষতি হয়েছে।

সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্র বাংলাদেশ সফর করে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ভারতের অর্থনীতি এবং কূটনীতিতে এই সংকটকে বড় পরাজয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ভারতের ব্যবসায়ীরা এতদিন বাংলাদেশি পর্যটকদের উপর নির্ভর করে যে অর্থনৈতিক সফলতা পেয়েছিলো, তা এখন তলানিতে ঠেকেছে। চিকিৎসা, কেনাকাটা এবং পণ্য রপ্তানি থেকে আয়ের যে বড় অংশ ছিল, তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত ভারতীয় ব্যবসায়ীরা মোদি প্রশাসনের ওপর দায় চাপিয়েছেন।

বাংলাদেশ আলু-পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করায় ভারতের কৃষকরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষোভে তারা মোদি সরকারের পদত্যাগ এবং উন্মাদ সাংবাদিক ময়ূখের শাস্তি দাবি করেছেন। কিছু বিক্ষুব্ধ কৃষক ময়ূখের বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন। এদিকে, ময়ূখের বাড়ি পাবলিক টয়লেট বানানোর দাবিও উঠেছে।

বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে ভারতের রেমিট্যান্স আয় ছিল ১৬ বিলিয়ন বা ১৬০০ কোটি ডলার। এই আয় ভারতের গড় অর্থনীতির একটি বড় অংশ ছিল। বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে সেই আয় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে শত্রুতা বাড়িয়ে ভারত নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে। ব্যবসায়ী এবং কৃষক সমাজের ক্ষোভ মোদি সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যে ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তা এখন স্পষ্ট।

Muhurto 24 News
📆 আজ: শুক্রবার
🕐 সময় -রাত ১১:৩১ - (বসন্তকাল)
◘ ২৮ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
◘ ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬ - হিজরী