মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাগুরছড়ায় খাসি (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের বর্ষবিদায় ও নতুন বছরকে বরণে ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দিনব্যাপী উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের আয়োজনে উৎসবটি হয়। উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আব্দুছ সালাম চৌধুরী, জেলা পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন (পিপিএম সেবা)। যদিও চলতি মৌসুমে পানের ব্যবসা মন্দার কারণে ও আর্থিক সংকট থাকায় ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠান হবে না বলে জানিয়েছিল খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল।
খাসিয়া সম্প্রদায়ের ১২৫তম বর্ষ বিদায় ও ১২৬তম নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উপলক্ষে নানান রঙের পোশাক পরে খাসিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। ছিল নাচ-গান, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। মাঠের একপাশে খাসিদের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে মেলা বসে। সুপারি গাছের পাতা দিয়ে মঞ্চ তৈরি করা হয়। তবে এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় আয়োজন কিছুটা কম ছিল। কারণ একদম শেষ সময়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছর ২৩ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। খাসিয়ারা তাদের পোশাক ও সাজসজ্জায় নেচে–গেয়ে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন। ‘সেং কুটস্নেম’ উৎসবের দিন সবাই মিলে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, খাবার খেয়ে আনন্দে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন। অনুষ্ঠানস্থলে পুরো মাঠ জুড়ে মেলা বসে।
বিভিন্ন স্টলে খাসিয়ারা পোশাক, পান, তীর, ধনুক, বাঁশ-বেতের তৈরি জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন। এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন। এ বিষয়ে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক, ফিলা পতমী বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অনুষ্ঠানটি করতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগিতায় ‘সেং কুটস্নেম’ আয়োজন করি। খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিশন প্রধান সুছিয়াং বলেন, সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এই উৎসবে এসে অংশ নেন। দেশ–বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন। “খাসি সেং কুটস্নেম” বা বর্ষ বিদায় খাসিয়াদের একটি সর্বজনীন উৎসব।