মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: ৬ জনের গ্রুপের সবাই বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাজে সিদ্ধহস্ত। পরিচয় দিতো নিজেদেরকে বিকাশের হেড অফিসের স্টাফ হিসেবে। প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে তারা। এমন ৬ প্রতারককে নিজেদের জালে আটকে ফেলতে সক্ষম হন মৌলভীবাজর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর সদস্যরা।
গত ২৬ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে মৌলভীবাজার শহরের সৈয়ারপুর এলাকার যুক্তরাজ্য প্রবাসী হারুন মিয়ার মালিকাধীন বাসার ৬ তলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অটককৃতরা সবাই ওই বাসার ৬ তলায় ভাড়া থাকত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। প্রেস ব্রিফিং শেষে গ্রেফতারকৃতদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মৃত রতন মোল্লার ছেলে মোঃ টিটুল মোল্লা টিটু (৩৬), বিদ্যুত শেখের ছেলে রুবেল শেখ (৩১), আইয়ুব হাওলাদারের ছেলে সবুজ হাওলাদার (২৯), শেখ ইমফাজের পুত্র হৃদয় শেখ (২০),নওশাদ আহমেদ এর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২৫), ও সামছু খালাশির ছেলে হাসান খালাশি (২১)। আটককৃতদের বাড়ি ফরিদপুর সদর ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়।
আটকের সময় তাদের কাছ থেকে বিকাশ প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনসহ মোট ২১টি সচল মোবাইল সেট এবং নগদ ৬ হাজার ৩শত ৯০ টাকা জব্দ করা হয়। এছাড়া তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের উপবৃত্তিভোগী শিক্ষার্থী এবং বয়স্কভাতা ভোগীদের মোবাইল নম্বরসহ ১২ পাতার একটি তালিকা জব্দ করা হয়েছে। যে তালিকা থেকে তারা ভিকটিমদের কল দিয়ে প্রতারণা করতো।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয় চক্রটি অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অবৈধভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকার বয়স্কভাতা ভোগী, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের উপবৃত্তি ভাতাভোগী শিক্ষার্থীদের তালিকা ডাউনলোড করে সেখান থেকে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করত। পরবর্তীতে নিজেদেরকে বিকাশের হেড অফিসের স্টাফ পরিচয় দিতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। এই চক্র অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অবৈধভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকার বয়স্কভাতা ভোগী, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের উপবৃত্তি ভাতাভোগী শিক্ষার্থীদের তালিকা ডাউনলোড করে সেখান থেকে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করত। পরবর্তীতে নিজেদেরকে বিকাশের হেড অফিসের স্টাফ পরিচয় দিয়ে শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে কৌশলে তাদের কাছ থেকে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে বিকাশ একাউন্টে থাকা টাকা আত্মসাৎ করত।
জেলা গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চক্রটি এই কাজের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত এবং এই কাজকে তারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত সবাই ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা। মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে কাজের সুবিধার্থে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে এই প্রতারনা করে আসছিল।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদর্শন কুমার রায় (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সারোআর আলম, ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
শেয়ার করুন
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to email a link to a friend (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Click to share on X (Opens in new window)