সিলেটের বরেণ্য বুজুর্গ শায়খুল ইসলাম আল্লামা শায়খ লুৎফুর রহমান বর্ণভী (রহ.) প্রতিষ্ঠিত ও ফেদায়ে ইসলাম শায়খুল হাদীস আল্লামা খলীলুর রহমান হামিদী রাহিমাহুল্লাহ’র স্মৃতিজড়িত মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া লুৎফিয়া আনওয়ারুল উলূম হামিদ নগর বরুণা মাদরাসার হিফজ বিভাগের প্রবীণ শিক্ষক হাফিজ হাফিজুর রহমান আখন্দ এর বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত।
বৃহস্পতিবার (২২শে ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছস্থ অভিজাত টি ভ্যালি রেস্টুরেন্টে বরুণা মাদরাসার ‘ফুজালায়ে হিফয’ ছাত্রদের উদ্যোগে বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বরুণা মাদরাসার শিক্ষক, সাবেক ছাত্র ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় বরুণা মাদরাসার ‘ফুজালায়ে হিফয’ ছাত্রদের পক্ষথেকে হাফিজ হাফিজুর রহমান আখন্দকে হাদিয়া স্বরূপ নগদ ৭০,০০০/-(সত্তর হাজার) টাকা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য যে, বরুণা মাদরাসার প্রবীণ এ শিক্ষক ‘বড় হাফিজ সাব’ হিসেবে সর্বমহলে সমাদৃত ছিলেন। তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৭৭ ঈসায়িতে মৌলভীবাজার সদর থানার অন্তর্গত মাড়কোনা মাদরাসা থেকে কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন। অতঃপর পারিবারিক টানাপোড়নের কারণে পড়ালেখার ইতি টেনে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন মাদরাসায় অত্যন্ত সুনামের সাথে কুরআনের খেদমত করেন।
অতঃপর জামিয়া বরুণার সাবেক শায়খুল হাদীস আব্দুল মুমিত ঢেউপাশী রাহিমাহুল্লাহ’র অনুপ্রেরণা ও বরুণা মাদরাসার সাবেক মুহতামিম শায়খ খলিলুর রহমান হামিদী রাহিমাহুল্লাহ’র অপরিসীম আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে ১৯৯৬ ঈসায়িতে বরুণা মাদরাসার হিফজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হোন। সেই থেকে অদ্যবধি ২০২৪ ঈসায়ি পর্যন্ত সুনামের সাথে হিফজ বিভাগের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
যার ফলশ্রুতিতে উনার হাতে গড়ে উঠেছেন অসংখ্য হাফেজে কুরআন। যারা দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের খেদমতে আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। জীবন সায়াহ্নে বিনয়ী আর খোশমেজাজের অধিকারী শত শত হাফেজের শিক্ষকের শরীরে ভর করেছে বিভিন্ন রোগ বালাই। সুঠাম দেহের অধিকারী শ্রদ্ধেয় বড় হাফেজ সাহেব আগের মতো আর চলাফেরা করতে পারছেন না। বয়সের ভারে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন তিনি। মূলত এসব কারণেই শেষ বয়সে এসে সেচ্ছায় বিদায় নিয়েছেন মানুষ গড়ার কারিগর বড় হাফেজ সাহেব।